শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করাতে পারছে না সরকার

* বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শাসনামলে ছাড় হয়েছিল ৭৭ শতাংশ
* আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সময় ছাড়ের পরিমাণ ৪০ শতাংশেরও কম
মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান : বাংলাদেশের উন্নয়ন-সহযোগিদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্তির পরিমাণ কমে গেছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ২০০০-০১ অর্থবছর থেকে ২০০৫-০৬ অর্থবছর পর্যন্ত বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের পরিমাণ ছিল ৭৭ শতাংশ। সেখানে বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সময়ে অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ৪০ শতাংশেরও নিচে নেমে গেছে। এছাড়া অর্থ ব্যয়ে দাতাদের বিভিন্ন শর্ত পালনের পাশাপাশি শতভাগ স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা না থাকায় বর্তমান সরকারের সময়ে বৈদেশিক অর্থায়ন খরচে অনীহা বাড়ছে। গত অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এভাবে প্রতি বছরই বিপুল অংকের বৈদেশিক সহায়তা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। এ কারণে অর্থের পাহাড় জমছে পাইপলাইনে। অপরদিকে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেশীয় অর্থায়নে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উন্নয়ন সহযোগিদের সহায়তা খরচে কার্পণ্য দেখালেও সরকারি অর্থ খরচে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অত্যধিক। কারণ এখানে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা তুলনামূলক অনেক কম। দুর্নীতি-অনিয়মের সুযোগ থাকে বেশি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ের মধ্যে কিছুটা কম-বেশি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গ্যাপের পারিমাণ অনেক বেশি। প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক ব্যর্থতা আর সুশাসনের অভাবে বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করাতে পারছে না সরকার।
জানা গেছে, ২০০০-০১ থেকে ২০০৫-০৬ পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে উন্নয়ন-সহযোগিরা বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে ১ হাজার ৩৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করে। এর বিপরীতে ওই সময় তৎকালীন সরকার ছাড় করায় ৭৯৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। পাইপলাইনে আটকে ছিল মাত্র ২৩৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। ওই সময় মোট অঙ্গীকারের ৭৬.৯৬ শতাংশ ছাড় করাতে সক্ষম হয়েছিল। আর বাকি মাত্র ২৩.০৪ শতাংশ পাইপলাইনে ছিল।
বছরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, ২০০০-০১ অর্থবছরে বৈদেশিক সাহায্যের অঙ্গীকার ছিল ২০৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ছাড় হয়েছে ৮৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। পাইপলাইনে আটকা ছিল ৬৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে ২০০১-০২ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৮৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, ছাড় হয়েছে ১৪৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। পাইপলাইন থেকে তখন বেশি ছাড় হয়েছিল ৫৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ২০০২-০৩ অর্থবছরে ২১৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, ছাড় হয় ১৫৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল ৫৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ১৯২ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ছাড় হয় ১০৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল ৮৯ কোটি ডলার। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ১৫৫ কোটি ২০ লাখ ডলার, ছাড় হয় ১৪৯ কোটি ১০ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ১৭৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, ছাড় হয়েছিল ১৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল মাত্র ২১ কোটি ৯৭ লাখ ডলার।
এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৬-০৭ থেকে ২০০৭-০৮ এই দুই অর্থবছরে দাতারা ৫০৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এর বিপরীতে ২৬৯ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় হয়। পাইপলাইনে ছিল ১৪০ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। ওই সময় মোট অঙ্গীকারের ৫২.৭৯ শতাংশ ছাড় হয়। বাকি ৪৭.২১ শতাংশ পাইপলাইনে থেকে যায়। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে অঙ্গীকার করেছিল ২২৫ কোটি ৬১ লাখ ডলার, ছাড় হয় ১৬৩ কোটি ৫ লাখ ডলার, পাইপলাইনে থাকে ৬২ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ২৮৪ কোটি ২৪ লাখ ডলার, ছাড় হয় ২০৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে থাকে ৭৮ কোটি ৯ লাখ ডলার।
এরপর ক্ষমতায় আসে বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। ২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত নয় বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন-সহযোগীদের কাছ থেকে বৈদেশিক সহায়তা এসেছে ২৮ হাজার ৬০১ মিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় দুই লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি অর্থবছরে গড়ে প্রায় ৩,১৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা পাওয়া গেছে। অথচ এই সময়ে ৭০ হাজার ২৯৬ মিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা পাঁচ লাখ ৮৩ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি অর্থবছরে গড়ে প্রায় ৭,৮১০ মিলিয়ন ডলার। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিশ্রুতির ৪০ শতাংশেরও কম প্রাপ্তি হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ৯ বছরে।
প্রতি অর্থবছর হিসাবে দেখা গেছে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার অঙ্গীকার ছিল ২৪৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, ছাড় হয়েছে ১৮৪ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল ৫৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। ২০০৯-১০ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ২৯৮ কোটি ৩৬ লাখ ডলার, ছাড় হয় ২২২ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে যায় ৫৭ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১০-১১ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৫৯৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার, ছাড় হয় ১৭৭ কোটি ৬৭ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে ছিল ৪১৯ কোটি ১৯ লাখ ডলার। ২০১১-১২ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৪৭৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, ছাড় হয় ২১২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকা পড়ে ২৬৩ কোটি ৮১ লাখ ডলার। ২০১২-১৩ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৫৮৫ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, ছাড় হয় ২৮১ কোটি ১০ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে যায় ৩০৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৫৮৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার, সরকার ছাড় করতে পারে ৩০৮ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে থাকে ২৭৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৫২৫ কোটি ৮৪ লাখ ডলার, ছাড় হয় ৩০৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে পড়ে ২৭৮ কোটি ৬২ লাখ ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ৭০৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার, ছাড় হয় ৩৫৬ কোটি ৩৫ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে যায় ৩৮৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অঙ্গীকার ছিল ১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, ছাড় হয় মাত্র ১৭২ কোটি ৩৫ লাখ ডলার, পাইপলাইনে আটকে থাকে সিংহভাগ ১ হাজার ২৪৮ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। সর্বশেষ ইআরডি বলছে, গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্তির পরিমাণ ৬ হাজার ২৯০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার; বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ৫২ হাজার ২০৭ কোটি টাকা।
বিশেজ্ঞরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণের অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে নানা প্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে হয়। এতে আছে ধাপে ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। এ ছাড়া দুর্নীতি, অনিয়মের সুযোগ প্রায় থাকেই না। পাশাপাশি প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা, ইংরেজি ভাষায় পশ্চাৎপদতা এবং সক্ষমতার অভাব ইত্যাদিও অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত। এ কারণে সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর চাপ বাড়ছে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছরই সংশোধিত এডিপিতে কমানো হচ্ছে বৈদেশিক ঋণের বরাদ্দ। যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক সাহায্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না সেসব প্রকল্পের পরিচালকরা কোনো জবাবদিহিতার আওতায় আসছেন না। ফলে এই ধারা অব্যাহত রয়েছে বছরের পর বছর।
তারা বলেন, বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্তির পরিমাণ প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে প্রতিশ্রুতির তুলনায় প্রাপ্তির মধ্যে অনেক গ্যাপ থেকে যাচ্ছে। এ গ্যাপ যত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ততই ত্বরান্বিত হবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সহায়তার প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়েরর মধ্যে কিছুটা কম-বেশি থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কম-বেশির পারিমাণ একটু বেশি। এর কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, যেসব প্রকল্পের সহায়তা পাওয়া যায় সঠিক সময়ে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। এখনও প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, একটা প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়িত না হলে এর প্রভাব অর্থনীতিতে দুভাবে পড়ে। প্রথমত, প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে। দ্বিতীয়ত, সঠিক সময়ে ওই প্রকল্পের বেনিফিট জনগণ পান না। তাই সরকারকে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পাইপলাইনে বৈদেশিক সহায়তার অর্থ আটকে থাকাটা সরকারের প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে হয়েছে। প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে না করা এবং দাতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব ঠিকমতো না দেয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। এসব অর্থ ছাড় করাতে সরকারকেই বেশি উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। তিনি বলেন, জাতিসংঘের এমডিজি ও এসডিজি বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলো সাহায্য ও ঋণের অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু সে তুলনায় আমরা তা আনতে পারিনি। তাই অঙ্গীকার পাওয়ার চেয়ে কতটুকু আদায় করা যাবে, সে অনুসারে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার দিকে নজর রাখতে হবে।
এদিকে প্রকল্পে সহায়তা বাড়লেও বৈদেশিক অর্থায়ন খরচে অনীহা বাড়ছে। গত অর্থবছরে বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এভাবে প্রতি বছরই বিপুল অংকের বৈদেশিক সহায়তা অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে। এ কারণে অর্থের পাহাড় জমছে পাইপলাইনে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থ ব্যয়ে দাতাদের বিভিন্ন শর্ত পালনের পাশাপাশি শতভাগ স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা থাকায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এতে নিরুৎসাহিত হন। এ ছাড়া বৈদেশিক অর্থায়নে অপচয়, অপব্যবহার আর দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম, যা অর্থ ব্যয় না হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অপরদিকে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেশীয় অর্থায়নে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা খরচে কার্পণ্য দেখালেও সরকারি অর্থ খরচে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অত্যধিক। কারণ এখানে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা তুলনামূলক অনেক কম। দুর্নীতি-অনিয়মের সুযোগ থাকে বেশি।
বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়ন যাছাই করে দেখা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আকর্ষণ বাড়ছে সরকারের নিজস্ব তহবিলের প্রতি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ খরচ না হলেও সরকারি তহবিলের এ পরিমাণ টাকা খরচ করা গেছে ঠিকই। অর্থাৎ বৈদেশিক অংশ থেকে বাদ গেলেও সরকারি তহবিলের অর্থে সমপরিমাণ টাকা ঠিকই বরাদ্দ রাখা হয়।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকে দাতারা বলেন, নতুন সহায়তার ব্যাপারে দাতাদের তাগাদা না দিয়ে পাইপলাইনে আটকে থাকা সহায়তার অর্থ দ্রুত ছাড়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। ওই সহায়তা পেলে সরকার উন্নয়ন কর্মকা- আরও বেশি এগিয়ে নিতে পারবে।
বিশ্বব্যাংকের লিড ইকনোমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় পেতে হলে অনেকগুলো প্রক্রিয়া পার করতে হয়। অর্থাৎ সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী দু’পক্ষের অনেকগুলো শর্ত থাকে। এসব শর্ত পূরণ করেই অর্থ পেতে হয়। তাই তাড়াহুড়ো কিংবা শর্টকাট প্রক্রিয়ায় এই টাকা খরচের সুযোগ নেই। উদ্দেশ্য ভালো হলেও নিয়মকে পাশ কাটিয়ে কেউ যেতে পারবেন না। অন্যদিকে সরকারি অর্থে এ রকম কোনো বাধা নিষেধ বা তৃতীয় পক্ষ থাকে না। তবে সরকারি অর্থ ব্যয়ে অনেক সময় কেনাকাটার মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি জানান, বর্তমানে পাইপলাইনে জমা অধিকাংশই সস্তা সুদের ঋণ। এই সুযোগ তো সবসময় থাকবে না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ